নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গভীর রাতে সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে এক নারী (২৯) ও তার ১২ বছরের মেয়েকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার চর ওয়াপদা ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শহর মাইজদী থেকে আবুল খায়ের ওরফে মুন্সী মেম্বার নামক ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি চরওয়াপদা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি এবং সাবেক ইউপি সদস্য। গ্রেপ্তার ৫০ বছর বয়সী আবুল খায়ের চরওয়াপদা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চর কাজী মোখলেছ গ্রামের মৃত গোলাপের রহমানের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী পেশায় একজন দিনমজুর। কাজের জন্য তাকে অধিকাংশ সময় বাড়ির বাইরে থাকতে হয়। ৩-৪ দিন পর পর বাড়িতে আসেন। ভুক্তভোগী গৃহবধূর ভাষ্যমতে, স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগে সোমবার গভীর রাতে তার বসত ঘরের সিঁধ কেটে তাকে এবং তার মেয়েকে ধর্ষণ করে তিন ব্যক্তি। তবে, তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ দুজনকে চিনতে পারলেও আরেকজনকে তিনি চিনতে পরেননি।
নির্যাতিতার স্বামী বলেন, ‘মুন্সী মেম্বার কিছুদিন আগে তার স্ত্রীকে পোড়া মোরগ খাওয়ানোর প্রস্তাব দেয়। আমার স্ত্রী ওই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মুন্সী মেম্বার আমার স্ত্রী মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে ফোনে তাকে উত্যক্ত করত। পরে মোবাইল নম্বর বদল করে দিলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এসব ঘটনার জের ধরে সে সঙ্গীয় লোকজন নিয়ে এ ঘটনা ঘটায়।’
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এ ঘটনায় ভিকটিম একজনকে শনাক্ত করেছেন। তিনি চর ওয়াপদা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মুন্সি মেম্বার। ওই গৃহবধূ ও তার মেয়েকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের দিন নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি দেশব্যাপী আলোড়ন তোলে। সোমবার নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস ওই দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় ১৬ আসামির মধ্যে ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।