প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ব্যাপক জালিয়াতি, আটক ১২৪

আটক কৃতদের মধ্যে বিভাগের ৯৬ জন ও বরিশাল বিভাগের ২৮ জন। প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে ডিজিটাল জালিয়াতির অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়। 
আজ শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
জানা গেছে, শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সিলেট, রংপুর, বরিশাল বিভাগের ১৮ জেলায় একযোগে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেছিলেন তিন লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭ জন চাকরিপ্রার্থী। তবে কতজন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন, তা এখনো জানায়নি অধিদপ্তর।
তিন বিভাগের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে তাদারকির দায়িত্বে ছিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পলিসি, অপারেশন বিভাগ। এ বিভাগের পরিচালক মনীষ চাকমা বলেন, আমাদের হাতে এখন পর্যন্ত যে তথ্য এসেছে, তাতে রংপুরে ৯৬ ও বরিশালে ২৮ জন গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছে। তবে সিলেট বিভাগের কোথাও গ্রেফতারের তথ্য পাওয়া যায়নি।
এবার, কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেও এত সংখ্যক জালিয়াত গ্রেফতার প্রসঙ্গে করা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা খুব সুষ্ঠু ও সুন্দর হয়েছে। বলা যায়, স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলো। তবে অসাধু-প্রতারকচক্র তো থাকেই। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, র‌্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা খুব তৎপর ছিলেন। ফলে যারাই জালিয়াতির চেষ্টা করেছেন, তারা কেউ ছাড় পাননি। তাদের পাকড়াও করা হয়েছে।’
কিছু পরিদর্শক হয়ত ‘লোভে পড়েছিলেন’ স্বীকার করে মনীষ চাকমা বলেন, ‘জেলাপর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে যারা পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন, তাদের কেউ কেউ হয়তো লোভে পড়েছিলেন। তারাই হয়তো প্রশ্ন বাইরে পাঠানোর চেষ্টা করেছিলেন বা পাঠাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে জালিয়াতি করে কেউ পরীক্ষা দিতে পারেনি। আগেই সবাইকে ধরে ফেলা হয়েছে।’
অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এবছর সরকারি কলেজ, পিটিআই, সরকারি মাধ্যমিক স্কুল, সরকারি কারিগরি কলেজ বা মাদরাসা, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন।
প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ লক্ষ্যে তিন বিভাগের প্রতিটি কেন্দ্রে, অর্থাৎ ৫৩৫টি কেন্দ্রেই ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়। পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে অর্থাৎ ৯টার মধ্যে প্রার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করা বাধ্যতামূলক করা হয়। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে সতর্কীকরণ ঘণ্টা বাজিয়ে কেন্দ্রের সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

Related Posts