BREAKING

সমালোচনার তোড়ে বইমেলা থেকে সরল ইতিহাস বিকৃতিকারী পোস্টার

অবশেষে সমালোচনার তোড়ে অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে প্রদর্শিত একটি পোস্টার সরিয়ে নিতে বাধ্য হলো বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ।

ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে পোস্টার নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এমনকি পোস্টারে যাদের ছবি রয়েছে, সেই জীবিত মুক্তিযোদ্ধারাই তুমুল প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

“৫২-এর চেতনা ২৪-এর প্রেরণা” স্লোগান লেখা বইমেলা উপলক্ষে তৈরিকৃত পোস্টারটি টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত কয়েকটি জায়গায় লাগানো হয়। ৫২’র ভাষা আন্দোলনকে প্রতিনিধিত্বকারী যে পোস্টারে যে ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে, সেটি ১৯৭১ সালের ১৫ মার্চ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে তোলা একটি সমাবেশের ছবি।

শনিবার, ১লা ফেব্রুয়ারি বইমেলার উদ্বোধনের পর এই পোস্টারের ছবির মূল ছবিটি দিয়ে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তোলেন অনেকেই।

পোস্টারে যাদের ছবি ছিল, তাদেরই একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা লীনু হক লিখেছেন:

“ছবিতে লাঠি হাতে আমি ১৯৭১-এর ১৫ মার্চের ছবি, ধিক্কার জানাই ছবি ব্যবহারের জন্য। ৫২-তে আমার জন্মই হয়নি। ৫২-তে স্বাধীনতার স্লোগান ছিল না। মাতৃভাষার স্লোগান ছিল।”

পোস্টারে গ্রাফিক্সের মাধ্যমে যেসব স্লোগান লেখা হয়েছে, সেসব নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

পোস্টারের উদ্দেশ্য এবং বিতর্ক সৃষ্টি প্রসঙ্গে লীনু হক আরও লিখেছেন:

“আমার তো মনে হয়,ফারুকী এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছে, ক্ষমতাসীনদের খুশি করল, ক্ষমতাসীনদের পতন হলে বলবে, আমি তো ইচ্ছাকৃতভাবে ঐ ছবি ব্যবহার করেছি, বঙ্গবন্ধুকে প্রকাশ করার জন্য। তখন ছবি দেখিয়ে তোমাদের দ্বারস্থ হবে। বিগত সময় যেমন বঙ্গবন্ধুকে ব্যবহার করে সুযোগ সন্ধানীরা সুযোগ নিয়েছে। ব্যাপারটা আমাকে চোখে আঙুল দিয়ে হাসান মোরশেদ দেখিয়ে দিল। উপরেরটা খাবে তলেরটাও খাবে।”

এসব বিতর্কের পর পোস্টারটি সরিয়ে নিতে বাধ্য হলো বাংলা একাডেমি। তবে বাংলা একাডেমির দাবি, পোস্টারটি তারা তৈরি করেনি। অন্য একটি পক্ষের করা এই পোস্টার নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে তারা।

একুশে বইমেলা উপলক্ষে তৈরি করা পোস্টার নিয়ে এমন পরিস্থিতির বিষয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, “প্রথম কথা, এটা বাংলা একাডেমির পোস্টার না, বইমেলার পোস্টার। একাডেমির মেলার আয়োজকদের পক্ষ থেকে এটি বানানো হয়নি। অন্য একটি পক্ষ তৈরি করেছে। আমাদের কোনোভাবে দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। তবে আমরা জানার সঙ্গে সঙ্গে পোস্টারটি অপসারণ করা হয়েছে।”

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলা একাডেমির এক কর্মকর্তা বলেন, “পোস্টার একটি না। টিএসসির দিক থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত পুরো পথেই পোস্টার লাগানো হয়েছে একটু পরপর। পোস্টারে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নাম আছে। তবে যতটা জানি, এটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টকে দিয়ে করানো হয়েছে, ইনস্ট্রাকশন অনুযায়ী করেছে তারা।”

Related Posts